,

‘প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ঘেরাও করতে এলেও বাধা দেব না’

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তারা যদি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ঘেরাও করতে আসে তাও বাধা দেয়া হবে না। বরং তারা অফিস পর্যন্ত হেঁটে আসতে পারলে সসম্মানে বসিয়ে চা খাওয়ানো হবে। তাদের কথা শুনতেও আপত্তি নেই।’

শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক যৌথসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দলটির সভাপতি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনের ব্যক্তিগত লাইব্রেরি থেকে সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তো বলে দিয়েছি যে তারা যদি প্রাইম মিনিস্টার অফিসও ঘেরাও করতে আসে, পুলিশ তাদের যেন বাধা না দেয়। বিশেষ করে বাংলামোটরে বাধা দেয়া, এটা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছি।

‘আসুক না, হেঁটে হেঁটে যতদূর আসতে পারে; কোনো আপত্তি নেই। আমি তাদের বসাব, চা খাওয়াব, কথা বলতে চাইলে শুনব। কারণ আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তবে বোমাবাজি ও ভাঙচুর করলে বাধা দেব। সেটা করলে তারা উপযুক্ত জবাব পাবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে মানুষ কিছু পায়। দেশের মানুষ খাবার পায়, বাসস্থানের ব্যবস্থা হয়, শিক্ষা-চিকিৎসা ও কাপড় পায়। দেশের সব মানুষ যাতে খেতে পায় সে সক্ষমতা আওয়ামী লীগ সরকার অর্জন করেছে।’

সাম্প্রতিক জনশুমারিতে উঠে আসা দেশের সম্ভাব্য জনসংখ্যার উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘১৬ কোটি ৫০ লাখ প্লাস। সামান্য কিছু বাড়বে। কারণ বন্যাকবলিত এলাকায় গণনা হবে। আমার বিশ্বাস, এসব মানুষকে আমরা খাবার দিতে পারব। সব ব্যবস্থাই করতে পারব। সেই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।

‘আওয়ামী লীগ যখন আছে তখন পাবে। কিন্তু লুটেরারা এলে কী করবে আমি জানি না। তারা মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে এখন অর্থ পাচারকারীর দল। আপনারা বিএনপিকে জিজ্ঞাসা করেন তাদের নেতা কে? তারা ইলেকশনে গিয়ে, ক্ষমতায় গিয়ে কাকে বসাবে? এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারী, হত্যাকারী, খুনি- এরাই তো তাদের নেতা? বাংলাদেশে তারা একটা মানুষ পায়নি যাকে তাদের নেতা বানাবে?’

বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ নম্বর ধারার প্রসঙ্গ তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি মনে করি কারও না কারও কথা বলা উচিত। কথা যত পারে বলুক। যদিও তারা সারা দিন কথা বলেই যাবে আর বলবে- আমাদের কথা বলতে দেয়নি।

‘তারা মিটিং করে, লোক আসে না। আর বলে যে আমরা লোক আসতে দিই না। এই হলো অভিযোগ। তাদের কাছে মানুষ কেন আসবে, এটা হলো বাস্তব কথা।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের কাজ আমরা করে যাব। কারণ দেশের উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য। দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। সেটা ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছে আর সারা বিশ্ব সমস্যায় ভুগছে। সে জন্য দেশবাসীকে কৃচ্ছ্রতা সাধন করতে হবে। নিজের সঞ্চয় বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। সেটা যেন আমাদের প্রতিটি অঞ্চলের নেতাকর্মীরা করে এবং মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে।’

সামনে আবারও বন্যার শঙ্কা ব্যক্ত করে তার জন্য প্রস্তুত থাকতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগপ্রধান।

আসন্ন শোকাবহ আগস্ট মাসজুড়ে নেয়া কর্মসূচিগুলো সভায় উপস্থাপন করেন ওবায়দুল কাদের। পরে আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে বাকি কর্মসূচিগুলো চূড়ান্ত করেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।

এ ছাড়া ঢাকা মহানগর এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর